একুশের বইমেলায় শিশু কর্নারের পাশের একটি স্টল পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে প্ল্যাটফর্ম নামে প্রকাশনীর ৪৯২ নম্বর স্টলে এই আগুন দেওয়ার চেষ্টা হয়। সেখানকার প্রাঙ্গণের ফয়েজ আহমদ চত্বরের পেছনের অংশে এই স্টলের অবস্থান।
টানা তিনদিন সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির পর আসা দর্শনার্থীদের জন্য মেলার ২২তম দিনে বিকাল ৩টায় ফটক খুলে দেওয়া হয়। প্রবেশপথে নিরাপত্তা তল্লাশিতে ছিল আগের চেয়ে একটু কড়াকড়ি।
মেলার পুরো সময়ে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি এমনিতে ছিল কম। আগুন দেওয়ার চেষ্টার পরও মেলার সময়ের বাকি দুই ঘণ্টায় বইপ্রেমীদের মধ্যে কোনো প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। তাদের চলাফেরা স্বাভাবিকই ছিল।
স্টলের বিক্রয়কর্মী প্রসেনজিৎ রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্টলের পেছন দিকে কাগজ জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমরা পেট্রোল বা কেরোসিনের গন্ধ পেয়েছি।”
প্রথমে নিজেরা চেষ্টায় আগুন নেভাতে চেষ্টা করেন স্টলকর্মীরা। পরে অন্য স্টলের কর্মীরা মিলে আগুন নিভিয়ে ফেলে। আগুনে স্টলের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
প্রসেনজিৎ বলেন, “সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে পুলিশ দুজনকে ডিটেক্ট করতে পেরেছে। তাদের একজনের মুখে দাড়ি ছিল।”
সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে গিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সন্ধ্যা ৬টা ৭ মিনিটে স্টলের একজন দাড়ি-টুপিওয়ালা ব্যক্তি কাগজ জড়ো করে আগুন দিয়ে চলে যাচ্ছেন। একই সময়ে স্টলের সামনের অংশে আরেকজন বিক্রয়কর্মীর সঙ্গে আলাপ করছিলেন।
তবে এই সময়ের ফুটেজে কিছুটা অস্পষ্টতা দেখা যায়।
এরপর সন্ধ্যা ৬টা ১৮ মিনিটে ওই দুজনকে মেলার রমনা কালি মন্দির ফটক দিয়ে এক সঙ্গে বের হয়ে টিএসসির দিকে যেতে দেখা যায়।
তাদের একজন বাদামী রঙের পাঞ্জাবি-পাজামা পড়া প্রায় ৩৫ বছর বয়স্ক টুপি-দাড়িওয়ালা ব্যক্তি। তার সঙ্গে থাকা অপরজন হলুদ-সাদা রঙের টি-শার্ট পরা ছিলেন। দ্বিতীয়জনের বয়স ৩০-এর মতো হবে।
সোয়া ৭টার দিকে প্ল্যাটফর্ম স্টল এলাকায় গিয়ে সেখানে বেশি পরিমাণে বাতি লাগাতে ব্যস্ত দেখা যায় ইলেকট্রিশিয়ানদের।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিসি ক্যামেরার ছবিতে ধরা পড়েছে, দুজন তরুণ আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছে।”
“পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। তারা বলেছেন, এদেরকে অবশ্যই খুঁজে বের করতে পারবেন।”
তবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি বলে জানান শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নাশকতার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সফল হয়নি। যে দুইজনের ছবি পাওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।”
No comments:
Post a Comment