Thursday 25 February 2016

প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে কমিউনিটি সেন্টার
















রাজধানীর দয়াগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধিকাংশ দিনই বিয়ে বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান হতো। স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এসব অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া আদায় করত এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল। স্কুলের নিচতলা দখল করে কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ভাড়া দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আয় ছিল তাদের নিয়মিত কাজ।
এমন অভিযোগ পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ স্কুলে অভিযান চালায় র‍্যাব-১০ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত। র‍্যাব-১০-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বরের নেতৃত্বে এই অভিযানে স্কুল থেকে ১৩৫টি চেয়ার, ১২টি ডেকচি, একটি লোহার কড়াই, ছয়টি অসিন টপ, ১২টি ঢাকনা, আটটি করাত, দুটি ড্রাম, দুটি ত্রিপল, ৭৪টি গ্লাস, ১৮টি কাচের জগ, দুটি স্টিলের চুলা জব্দ করা হয়।
অনুষ্ঠান আয়োজনের অপরাধে ইদ্রিস আলী (৪৬), মাসুদ রানা (৪০), রাজু আহম্মেদকে ১৫ দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।
সারওয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, তিন তলা ভবনের এই স্কুলের নিচতলার বড় চারটি কক্ষ দখল করে কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ভাড়া দেওয়া হতো। এর সঙ্গে স্কুলটির ব্যবস্থাপনা কমিটি জড়িত। প্রতিটি অনুষ্ঠানের জন্য ২০ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়া হতো। তবে ব্যবস্থাপনা কমিটির কাউকে অভিযানের সময় পাওয়া যায়নি। ডেকোরেটরের লোকজন স্কুল ভবনের একটি অংশ প্রায় নয় বছর ধরে দখল করে রেখেছিল। তাদের তিনজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। এঁদের মধ্যে ইদ্রিস আলী ডেকোরেটরের মালিক ও মাসুদ রানা ব্যবস্থাপক।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দিনের বেলা অনুষ্ঠান থাকলে বেশ আগেই ছুটি হয়ে যেত। এ জন্য নিয়মিত ক্লাস নেওয়া হতো না এই স্কুলে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপির প্রভাবশালী লোকজন এর সঙ্গে জড়িত। তাঁদের লোকজনই স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে জড়িত। নতুন কমিটি না করে পুরোনো কমিটির লোকজন স্কুল ভবনে এই কমিউনিটি সেন্টার বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দিয়ে আসছিলেন। রান্নার কারণে ভবনের শ্রেণিকক্ষগুলোতে কালো দাগ পড়েছে। এর ফলে ১১০০ শিক্ষার্থীর পড়ালেখায় অসুবিধা হতো।
দয়াগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বাধা দিলেও প্রভাবশালীরা কথা শুনতেন না। তাদের ইচ্ছেমতো অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতো।’



4 comments: